| |
               

মূল পাতা রাজনীতি বিএনপি বাসে-ট্রেনে অগ্নিসংযোগের মধ্য দিয়ে বিএনপির হরতাল চলছে


বাসে-ট্রেনে অগ্নিসংযোগের মধ্য দিয়ে বিএনপির হরতাল চলছে


রহমত নিউজ ডেস্ক     19 November, 2023     11:55 AM    


বাসে এবং ট্রেনে অগ্নিসংযোগের মধ্য দিয়ে রবিবার শুরু হয়েছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপির ডাকা ৪৮ ঘণ্টা হরতালের প্রথমদিন। আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার বিএনপি ৪৮ ঘণ্টার হরতালের কর্মসূচি ঘোষণা করেছিল। গত ২৮ অক্টোবর ঢাকায় রাজনৈতিক রাজনৈতিক সংঘাতের পর বিএনপি একদিন হরতালের ডাক দিয়েছিল। এরপর থেকে পাঁচ দফায় মোট ১০দিন অবরোধ কর্মসূচি পালন করেছে বিএনপি। রবিবার ভোর ছয়টা থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে হরতাল শুরু হলেও আগের রাতেই জামালপুরের সরিষাবাড়ীতে যমুনা এক্সপ্রেস নামের একটি যাত্রীবাহী ট্রেনে আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এ নিয়ে গত এক সপ্তাহে দু’টি ট্রেনে আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটলো।

ফায়ার সার্ভিস জানিয়েছে, আগুনে যমুনা এক্সপ্রেসের তিনটি বগি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এছাড়া ঢাকা, কুমিল্লা এবং জয়পুরহাট জেলায় অন্তত পাঁচটি বাসে আগুন এবং একটি সিএনজি অটোরিক্সায় ককটেল হামলার খবর পাওয়া গেছে। তবে এসব ঘটনায় এখন পর্যন্ত হতাহতের কোন খবর পাওয়া যায়নি। এদিকে, রবিবার সকালে ঢাকার রাস্তায় যান চলাচল তুলনামূলক কম দেখা গেছে। এ অবস্থায় গণপরিবহন সংকটে অফিসগামী মানুষদের অনেকেই দুর্ভোগে পড়েন।

জামালপুরে ট্রেনে আগুন
ফায়ার সার্ভিস জানিয়েছ, হরতালের আগে শনিবার রাতে জামালপুরের সরিষাবাড়ীতে যমুনা এক্সপ্রেস নামের একটি যাত্রীবাহী ট্রেনে আগুন দেওয়া হয়েছে। এতে ট্রেনটির তিনটি বগি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে ট্রেনে যাত্রী না থাকায় কেউ হতাহত হয়নি। কর্মকর্তারা বলছেন, ট্রেনটি সরিষাবাড়ী রেলস্টেশনে ইঞ্জিন বন্ধ অবস্থায় দাঁড়িয়ে ছিল। এরপর শনিবার রাত দেড়টার দিকে ট্রেনে আগুন দেওয়া হয়। এতে ট্রেনের তিনটি বগি পুড়ে যায়। পরে ফায়ার সার্ভিসের চেষ্টায় রাত সাড়ে তিনটার দিকে আগুন পুরোপুরি নেভানো সম্ভব হয়। এর আগে, বিএনপির পঞ্চম দফা অবরোধ চলাকালে গত বুধবার রাতে টাঙ্গাইল রেলস্টেশনে দাঁড়িয়ে থাকা একটি কমিউটার ট্রেনে আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটেছিল।

সড়কে যান চলাচল কম, যাত্রীদের দুর্ভোগ
সংবাদদাতারা জানিয়েছেন, ঢাকার ধানমণ্ডি, কলাবাগান, গ্রিনরোড, বাংলামোটর, কারওয়ান বাজার, ফার্মগেট, বিজয় সরণি, মিরপুর, শ্যামলী, মোহাম্মদপুর, লালমাটিয়া, মহাখালী, বনানী, গুলশানসহ বিভিন্ন সড়কে সীমিত সংখ্যক বাস, ট্রাক, পিকআপ ভ্যান এবং ব্যক্তিগত গাড়ি চলাচল করছে। যদিও প্রয়োজনের তুলনায় কম পরিবহন থাকায় অফিস ও স্কুলগামী যাত্রীরা বিপাকে পড়েছেন। এছাড়া সিএনজি অটোরিক্সা ও রিক্সার সংখ্যা স্বাভাবিক দিনের মতই দেখা গেছে। তবে বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে রাস্তায় গাড়ির সংখ্যা বাড়ছে। অন্যদিকে, আগের হরতাল-অবরোধের মত রোববারেও বন্ধ রয়েছে দূরপাল্লার যান চলাচল।

বাসে আগুন
ঢাকা, কুমিল্লা এবং জয়পুরহাট জেলায় অন্তত পাঁচটি বাসে আগুন দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে ফায়ার সার্ভিস। এসব ঘটনায় কেউ হতাহত হয়নি। ফায়ার সার্ভিস জানায়, শনিবার রাত ১০টা থেকে ১২টার মধ্যে ঢাকার ধানমণ্ডি ল্যাবএইড হাসপাতালের সামনে এবং মিরপুরের কালশীতে দু'টি বাসে আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটে। প্রায় একই সময়ে কুমিল্লা সদর উপজেলাতেও আরও একটি বাসে আগুন দেওয়া হয়। এছাড়া শনিবার রাত নয়টার দিকে ঢাকার গুলিস্তান এবং জয়পুরহাট জেলায় দু'টি বাসে আগুন দেওয়ার খবর নিশ্চিত করেছে ফায়ার সার্ভিস।

তফসিল নিয়ে বিএনপির প্রতিক্রিয়া
বুধবার ১৫ই নভেম্বর বাংলাদেশের নির্বাচন কমিশন দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করে। তফসিল ঘোষণার পর ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের ভেতরে স্বস্তির প্রকাশ দেখা গেলেও, নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের জন্য সরকারের পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলনরত বিএনপির মধ্যে পাওয়া গেছে নানামুখী প্রতিক্রিয়া। দলটির নেতাদের কেউ কেউ মনে করছেন তফসিল ঘোষণা হলেও বৈশ্বিক চাপে সরকারকে নির্বাচনের আগেই একটি সমঝোতায় আসতে হবে।

তবে তফসিল ঘোষণার পর আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়ায় বুধবার সন্ধ্যায় বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী তফসিল প্রত্যাখ্যান করেন। পরদিন ৪৮ ঘণ্টার হরতাল ঘোষণা করে বিএনপি। এক ভার্চুয়াল ব্রিফিংয়ে  রিজভী বলেন, প্রধান নির্বাচন কমিশনার তার ভাষণে বলেছেন, অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন করবেন। এটা ডাহা মিথ্যা, ভন্ডামিপূর্ণ ও মেকি। শেখ হাসিনার অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন বিশ্বাস করা চোরাবালিতে পড়ার সামিল।

আগামী বছরের সাতই জানুয়ারি জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে এবং মনোনয়ন জমা দেয়ার শেষ তারিখ ৩০নভেম্বর। বুধবার সন্ধ্যায় জাতির উদ্দেশে দেয়া এক ভাষণে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে মতবিরোধ থাকার বিষয়টিও উল্লেখ করেন তিনি। এইসাথে নির্বাচনকে বাধাগ্রস্ত করার যেকোনো প্রচেষ্টা প্রতিহত করা হবে।শেখ হাসিনার পদত্যাগ ও নির্দলীয় নিরপেক্ষ কেয়ারটেকার সরকারের অধীনেই নির্বাচন হবে।